ঐক্য মানে একরূপতা নয়; বরং বহুত্বের মধ্যে সামঞ্জস্য।
"সকলে ঐক্য হও"— এই ছোট্ট বাক্যটির মধ্যে লুকিয়ে আছে মানবসমাজের এক চিরন্তন আহ্বান। মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঐক্যই মানুষকে একত্রিত করে গড়ে তুলেছে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা। কিন্তু আধুনিক সময়ে এই “ঐক্য” শব্দটি প্রায়শই বিভ্রান্তিকরভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। অনেকে মনে করেন, ঐক্য মানে হলো সবাই আমার চিন্তাধারা, মতবাদ বা আদর্শকে গ্রহণ করুক। কিন্তু প্রকৃত অর্থে, ঐক্য মানে একরূপতা নয়; বরং বহুত্বের মধ্যে সামঞ্জস্য।
বর্তমান সময়ে সমাজ ও রাজনীতিতে দেখা যায়, প্রতিটি গোষ্ঠী “ঐক্য” শব্দটিকে নিজের স্বার্থে ব্যাখ্যা করে।
☞ ধর্মীয় গোষ্ঠী চায় সবাই তাদের ধর্মমত মেনে চলুক — সেটাই তারা “ঐক্য” বলে মনে করে।
☞ রাজনৈতিক গোষ্ঠী ভাবে, তার দলের মতবাদে সবাই একমত হলেই সমাজে ঐক্য আসবে।
☞ এমনকি সামাজিক বা আদর্শিক গোষ্ঠীও বিশ্বাস করে, তাদের দৃষ্টিভঙ্গিই সর্বজনগ্রাহ্য হলে তবেই একতা আসবে।
এই দৃষ্টিভঙ্গি আসলে “ঐক্য” নয়, বরং একধরনের 'বুদ্ধিবৃত্তিক আধিপত্য বা চিন্তার একনায়কতন্ত্র'। এটি সমাজে বিভাজন আরও বাড়ায়, কারণ প্রতিটি পক্ষই চায় তার মতকে “সর্বজনীন সত্য” হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে।
প্রকৃত ঐক্য হলো বৈচিত্র্যের মধ্যে সহযোগিতা।
একটি সমাজে নানা ধরনের মানুষ থাকবে — তাদের বিশ্বাস, আদর্শ, জীবনধারা, এমনকি চিন্তার ধরনও আলাদা হবে। কিন্তু তারা যদি নিজেদের মৌলিক প্রয়োজন ও মানবিক মূল্যবোধের জায়গায় একে অপরের পাশে দাঁড়ায় — সেটিই সত্যিকারের ঐক্য।







💬 Comment