সূর্যের আলো ও সমাজের জাগরণ

ভূমিকা
সূর্য কখনো অন্ধকারের পেছনে ধাওয়া করে না। প্রকৃতির এই দৃশ্য মানবসমাজের জন্যও একটি শিক্ষার বার্তা বহন করে। অন্ধকার যত শক্তিশালীই মনে হোক না কেন, সূর্যের আলো উদিত হলেই তা দূরীভূত হতে বাধ্য।
অন্ধকারের আধিপত্য
যখন চারিদিকে অন্ধকার—উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম—সর্বত্রই অন্ধকার বিরাজ করে। অন্ধকার মনে করে, সে-ই সর্বশক্তিমান। দীর্ঘক্ষণ এ অবস্থা চলতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে পূর্বদিকে সূর্যের উদয় ঘটে।
সূর্যের আইন
সূর্যের একটি স্বভাবজাত নিয়ম আছে—প্রতিদিন ওঠে, প্রতিদিন অস্ত যায়। তার উদয়ের পথে কিংবা অস্ত যাওয়ার পথে কোনো বাধা থাকে না। সূর্য যতই উজ্জ্বল হয়, অন্ধকার ততই দূরে সরে যায়। সূর্য কখনো ভাবে না যে, সে অন্ধকারকে তাড়িয়ে দিচ্ছে; বরং জানে—তার উদয়ই অন্ধকারের পরাজয়। এজন্যই অন্ধকারের চেয়ে আলো শক্তিশালী।
সমাজের বাস্তবতা
সমাজেও একই দৃশ্য প্রতিফলিত হয়। যখন অন্যায়, অবিচার, অনাচার ছড়িয়ে পড়ে, তখন অন্যায়কারীরা ভাবে তারা-ই সর্বশক্তিমান। বাস্তবেও তাই দেখা যায়, কারণ ন্যায়পন্থীরা অনেক সময় অপেক্ষা করে—অন্যায় সরে গেলে তবেই তারা এগোবে। ফলে সমাজে সূর্যস্বরূপ মানুষরা অনেক সময় প্রকাশ পায় না।
সূর্যস্বরূপ মানুষ
যারা ন্যায়পন্থী, সৎকর্মশীল, ধৈর্যশীল এবং অন্যকে ভালো কাজের উপদেশ দেয়, তারাই সমাজের সূর্য। তাদের উপস্থিতিই সমাজ থেকে অন্যায় ও অন্ধকার দূর করতে পারে। এজন্য তাদের উচিত নিজেদের আলো—চরিত্র, ব্যবহার, জ্ঞান, আচরণ—আরও উজ্জ্বল করা।
সত্যিকারের করণীয়
এ কথা ভাবা ভুল যে, আগে অন্যায় দূর হবে, তারপর আমরা নিজেদের গড়ে তুলব। বরং সঠিক পথ হলো—নিজেদের মধ্যে উন্নত চরিত্র, জ্ঞান ও গুণের সমন্বয়ে সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব তৈরি করা। এর ফলেই অন্যায়কারীদের প্রভাব ক্ষীণ হবে। এটিই পৃথিবীর নিয়ম, এবং সূর্য প্রতিদিন আমাদের এ শিক্ষা দেয়।
উপসংহার
সমাজের প্রতিটি সৎকর্মশীল মানুষের প্রতি অনুরোধ, আগে নিজেদের ব্যক্তিত্ব ও গুণাবলি উন্নত করুন। ন্যায়, সুবিচার, সৎকর্ম, ধৈর্যশীলতা, আত্মসংযম, পরোপকারিতা, সময়ানুবর্তিতা, মানুষের প্রতি সম্মান, পিতা-মাতার আনুগত্য এবং স্রষ্টার আনুগত্য অর্জন করুন। তবেই সমাজ থেকে অন্যায় কার্যকরভাবে দূর হবে।
।। আমিন ।।
💬 Comment